খুলনা, বাংলাদেশ | ২৭শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১১ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  দুদকের মামলায় জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আবুল বারাকাত গ্রেপ্তার

বাগেরহাটে টানা বৃষ্টিতে পানিবন্দি মানুষ, ভেসে গেছে ঘের ও পুকুর

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট.

উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাত ও জোয়ারের পানিতে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। শহরের বিভিন্ন এলাকাসহ নিম্নাঞ্চলে হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি জমে জনজীবন একপ্রকার বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে সহস্রাধিক পরিবারের মানুষ, ভেসে গেছে ঘের, পুকুর ও ফসলি জমির আমন বীজতলা।

সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে বাগেরহাট শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ও ঘনবসতিপূর্ণ অনেক এলাকা। কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও কোমর সমান পানিতে মানুষের ঘর থেকে বের হওয়াই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। নিম্নআয়ের পরিবারে রান্না-বান্না থেকে শুরু করে শিশুদের স্কুলে যাওয়াসহ সবকিছুতেই নেমেছে অচলাবস্থা।

রামপাল উপজেলার বাইনতলা গ্রামের চিংড়ি চাষি আবু হুরায়রা বলেন, “আমার ৭ বিঘা ঘেরে চিংড়ির পোনা ছিল। হঠাৎ পানি বেড়ে গিয়ে সব ভেসে গেছে। এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা কঠিন হবে। একই এলাকার চিংড়ি ঘের মালিক হারুন শেখ জানান, কয়েকদিনের বৃষ্টিতে পানি বাড়তে বাড়তে সব ঘেরের পাড় ভেঙে গেছে। প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখন আবার পোনা কিনে, ঘের তোলার সামর্থ্য নেই।

পৌরশহরের খারদ্বার এলাকার পানি বন্দি গৃহবধূ রুনা বেগম বলেন, “ঘরের ভেতর পানি উঠে গেছে। চুলায় আগুন জ্বালাতে পারছি না। ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে খুব কষ্টে আছি। রিকশাচালক সুমন হাওলাদার জানালেন, রাস্তায় এত পানি যে রিকশা চালানো যায় না। দুই দিন কাজ করতে পারি নাই। বাচ্চাদের মুখে ভাত দিতে পারতেছি না। শিক্ষার্থী সাথী আক্তার বলেন, স্কুলে যেতে পারছি না, জুতা-পোশাক নষ্ট হয়ে যায়। বই-খাতাও ভিজে গেছে। ঘরেও পড়ালেখা করা যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোতাহার হোসেন বলেন, “টানা বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চলে আমনের বীজতলা ও শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. আবুল কালাম আজাদ জানান, বাগেরহাট সদরসহ উপকূলীয় তিন উপজেলায় ৯১৫টি চিংড়ি ঘের, ১৭৭টি পুকুর ক্ষতির মুখে পড়েছে। প্রাথমিকভাবে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে। বৃষ্টি থামার পর সঠিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমান পাওয়া যাবে।

খুলনা গেজেট/এসএস

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!